Jeet Exclusive: ‘আমিই নিজেই দেবকে ফোন করব..’, শাহরুখ-সলমন হাত মেলাচ্ছেন, টলিউড কেন পিছিয়ে? জবাব জিতের

Advertisement

তিনি রাজনীতির মঞ্চে নেই, ফিল্মি পার্টিতেও সচরাচার দেখা যায় না তাঁকে। ছবির প্রচার সারা তিনি মিডিয়ার সামনেও আসেন না। তবে গত দু-দশ ধরে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ‘সুলতান’ তিনি। ইদে ‘চেঙ্গিজ’ নিয়ে হাজির হয়েছিলেন, দীপাবলি মিটতেই মুক্তি পেতে চলেছে জিতের ২০২৩-এর দ্বিতীয় রিলিজ ‘মানুষ’। এবারও সঙ্গী সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায়। থাকছেন জিতু কমল ও বাংলাদেশের বিদ্যা সিনহা মিম। ছবি মুক্তির আগে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার সঙ্গে অকপট আড্ডায় জিৎ।

শুরুতেই দ্বিতীয়বার বাবা হওয়ার অভিনন্দন, কেমন আছেন?

জিৎ: খুব ভালো। ধন্যবাদ, ব্যস্ত সময় কাটছে। গোটা পরিবার খুব খুশি।

ফিল্মের প্রচার ছাড়া জিৎ-কে কোথাউ দেখা যায় না, কেন?

জিৎ: সেই জন্যই তো আমি ভাবছি বছরে ফিল্মের সংখ্যা বাড়াতে। এবছর ভেবেছিলাম ৩টে ছবি রিলিজ করব। দু-টো রিলিজ করছে ভগবানের কৃপায়। এই অভিযোগটা আমি বরাবরই শুনতে পাই। ফিল্মের রিলিজের সংখ্যা বাড়লে আরও বেশি করে সবার সঙ্গে দেখা হবে। চেষ্টা করি বিভিন্ন মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে কানেক্টেড থাকার। আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। ফিল্মের বাইরে কোনও স্ট্রং কারণ থাকলে নিশ্চয় জুড়ে থাকার চেষ্টা করব।

জিৎ-কে আগেও দর্শক অ্যাকশন হিরোর ভূমিকায় বা খাদি উর্দিতে দেখেছে, মানুষ কোন দিক থেকে আলাদা হবে?

জিৎ: সচেতনভাবে যে কোনও অভিনেতা চান তাঁর আগের ছবির চেয়ে নতুন ছবিটা আলাদা হোক। সেই অর্থে মানুষও এমন একটা গল্প যা নিয়ে আমি আগে কাজ করিনি। সঞ্জয় সমাদ্দার একটা সুন্দর গল্প লিখেছে। একটা মানুষের জীবনের ওঠা-নামা, অনেকগুলো লেয়ারস রয়েছে। বাবা-মেয়ের গল্প রয়েছে। আন্ডারওয়ার্ল্ডের কিছু সিনারিও রয়েছে, একজন সৎ পুলিশ অফিসার রয়েছে। সব মিলিয়ে একটা কম্প্লিট ফ্যামিলি এন্টাটেনার এই ছবি।

ছবির বড় অংশ জুড়ে রয়েছে বাবা-মেয়ের বন্ডিং। অনস্ক্রিন কন্যে অয়ন্যা তো আপনার মেয়েরই (নবন্যা) বয়সী। সেটা কতটা হেলেপফুল অভিনেতা জিতের কাছে?

জিৎ: ভীষণ। আমার তো ওকে দেখেই আমার মেয়ের কথা মনে পড়ত। আশ্চর্যজনক ঘটনা হল, অয়ন্যা আর নবন্যার জন্ম তারিখ এক। সেটা অয়ন্যাই আমাকে বলেছে। ওর সঙ্গে অভিনয় করার সময় অভিনেতা হিসাবে সেই অনুভূতিগুলো আপনা থেকেই চলে আসত। কোনও না কোনও জায়গায় ও আমার মেয়ের মতোই। ছবিতে তো অয়ন্যা আমার মেয়ে, আর সত্যি ও আমার মেয়ে হয়ে উঠেছে।

প্যান ইন্ডিয়া রিলিজ করেছিল চেঙ্গিজ, সেই অভিজ্ঞতা প্রযোজক জিৎ-কে কী শেখালো?

জিৎ: চেঙ্গিজ আমাদের নতুন দরজা অনেক খুলে দিয়েছে। অনেক অজানা সেন্টারে আমাদের ছবি ভালো ব্যবসা করেছে। আবার অনেক জায়গায় তেমন দর্শক হয়নি। সেগুলো ফিল্টার আউট করে আমরা এবার রিলিজের পরিকল্পনা করছি। চেঙ্গিজের মতো বড় মাপের মুক্তি হবে না, তবে ফিল্টার করে কোয়ালিটি হলে দেশজুড়ে মানুষ মুক্তি পাবে।

দুর্নীতি নিয়ে আপনি ছবি করতে চান, তবে চিত্রনাট্য নেই, আপনার এই সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে আলোচনা চলছে। কী বলবেন?

জিৎ: আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল এখানে (বাংলায়) দুর্নীতি নিয়ে কেন সিনেমা হয় না? আমি জবাব দিয়েছিলাম, এটার উত্তর লেখকরা দিতে পারবে। মানুষ হোক বা চেঙ্গিজ, সেটা একজন (ব্যক্তি) লিখেছেন। আমি সেটাতে অভিনয় করেছি এবং প্রোডিউস করেছি। যেদিন আমি গল্প লিখব…. আগেও লিখেছি আমি, বস ২ আমার লেখা। রাইটারটা যদি এমন গল্প নিয়ে আসে যা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে.. (একটু থেমে) শুধু দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বললেই তো হবে না, একটা ভালো গল্প যদি হয়, যা মানুষের মনে জায়গা করতে পারবে। আমার সেই ছবিতে কাজ করতে আপত্তি নেই। সেই ছবি বলুক না দুর্নীতি নিয়ে কথা।

ইন্ডাস্ট্রিতে নয় নয় করে ২১ বছর কাটিয়ে দিলেন, পঞ্চাশের বেশি ছবি ঝুলিতে। মানুষ জিৎ কতটা পাল্টালো?

জিৎ: আমি রোজ নিজেকে পাল্টানোর চেষ্টা করি। রোজ কিছু না কিছু শেখার চেষ্টা করি। ছোট হোক বা বড়, সবার চেয়ে কিছু শিখতে চেষ্টা করি। মানুষ হিসাবে যেই দিনটা আমার কিছু না শিখে শেষ হয়, মনে হয় দিনটা বৃথা গেল।

কমার্শিয়াল জোন ছেড়ে জিৎ বেরোতে পারল না, নিন্দকদের এই কটাক্ষের কী জবাব দেবেন?

জিৎ: আমি কিন্তু অসুর আর বাচ্চা শ্বশুরও করেছি। কিছুদিন আগে আমি একটা লাইন শুনেছি, সেটা ধরা করে বলি- ‘সবাইকে যদি খুশি করতে হয় তাহলে আইসক্রিম বেচো’ (হাসি)।

আপনি তাহলে কর্মাশিয়াল জঁরের ছবিই করে যেত চান?

জিৎ: আমি ভালো গল্পের অংশ হতে চাই। বাণিজ্যিক ঘরনার ছবিতে আমি বেশি স্বচ্ছন্দ, আমার মনে হয় তাঁরা খুব আর্শীবাদ ধন্য আর সৌভাগ্যবান যারা এই জঁর ছবিতে অনেকদিন টিকে থাকতে পারে। ব্যক্তিগতভাবে জিগ্গেস করলে বলব, আমি সত্তর-আশি বছর বয়স অবধি যদি আমি নাচা-গানা, অ্যাকশন করতে পারি তাহলে খুশি থাকব।

বলিউডে সলমন-শাহরুখ হাত মেলাচ্ছেন, টাইগার ভার্সেস পাঠান আসছে। টলিউড পারছে না কেন?

জিৎ: কেন এই ছবিতে তো সবাই জিৎ ভার্সেস জিতু দেখবে (মুচকি হাসি)।

বলিউডের সলমন-শাহরুখ মানে, টলিউডে তো দেব-জিত, তা নয় কী? দেবের সঙ্গে কবে… (প্রশ্ন শেষ হওয়ার আগেই)

জিৎ: তেমন যদি স্ক্রিপ্ট আমার হাতে আসে, তাহলে আমিই প্রথম দেবকে ফোন করব। শুধু দেব কেন, কদিন আগেই বুম্বাদা বলছিল ‘চল একসঙ্গে তিনজন মিলে ছবি করি’। যদি কোনও এমন স্ক্রিপ্ট আসে, তাহলে আমি নিজে থাকতে উদ্যোগ নেব। একসঙ্গে কাজ করব।

এতদিন ধরে দেবের সঙ্গে আপনার তুলনা টানা হচ্ছে, ব্যক্তিগতভাবে আপনি এই তুলনাটা কেমনভাবে দেখেন?

জিৎ: ব্যক্তিগতভাব আমি বিশ্বাস করি খুশি থাকতে চাইলে এইসব তুলনা আর প্রতিযোগিতার কথা নিজের জীবন থেকে দূরে রাখতে। এটা মিডিয়ার কাজ। তারা নিজেদের কনটেন্ট বিক্রির জন্য এইসব প্রতিযোগিতার কথা লেখে, সেটা দেব বনাম জিৎ হতে পারে আবার মেসি বনাম রোনাল্ডো কিংবা সলমন-শাহরুখ।

কেমন ‘মানুষ’ জিৎ অপছন্দ করেন

জিৎ: যার মধ্যে মান আর হুঁশ নেই। আমি তেমন মানুষ পছন্দ করি না।

 

 

 

Advertisement

Malek

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।