প্যালেস্তাইন ইস্যুতে বিশ্বের বহু মুসলিম দেশই ইজরায়েলকে স্বীকৃতি দেয় না। সেই তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশ, পাকিস্তানের মতো দেশও আছে। এদিকে সাম্প্রতিককালে গাজায় ইজরায়েলি সেনার হামলার জেরে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বহু মুসলিম দেশই খাপ্পা ইজরায়েলের বিরুদ্ধে। এদিকে ইজরায়েলের চিরশত্রু ইরান সেই পরিস্থিতিতে প্রস্তাব দিয়েছে, বিশ্বের সকল মুসলিম দেশ যেন ইজরায়েলি সেনাকে ‘জঙ্গি সংগঠন’ তকমা দেয়। ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি শনিবার মুসলিম দেশগুলির উদ্দেশে এই বার্তা দেন। সৌদির রাজধানী রিয়াদে মুসলিম দেশগুলির একটি সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘ইসলামি সরকারগুলোর উচিত দখলদার ও আগ্রাসী সরকারের সেনাবাহিনীকে (ইজরায়েলি সেনা) সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করা।’
৭ অক্টোবর সকাল সকাল হাজার হাজার রকেট গাজা ভূখণ্ড থেকে উড়ে এসেছিল দক্ষিণ ইজরায়েলে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুহূর্তের মধ্যে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছিল ইজরায়েলের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। হামাস জঙ্গিরা সীমান্তের বেড়া কেটে ইজরায়েলে ঢুকে পড়ে। অমানবিক তাণ্ডব চালায় তারা। সাধারণ মানুষকে বাড়িতে ঢুকে ঢুকে খুন করে হামাসের বন্দুকবাজরা। সঙ্গে অনেককেই অপহরণ করে তারা। এরপর ইজরায়েলও পালটা জবাবি হামলা চালিয়েছে। তাতে গাজায় মৃত্যু হয়েছে বহু মানুষের।
জানা গিয়েছে, ইজরায়েলি সেনার ক্রমাগত আক্রমণ এবং অবিরাম বোমা বর্ষণের জেরে বিধ্বস্ত গাজা। ইজরায়েলের তরফে জানানো হয়েছে, ‘গাজাকে দুই ভাগে ভাগ’ করে ফেলা হয়েছে হামলার চালিয়ে। প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে হামলা চালিয়েছিল হামাসের বন্দুকবাজরা। এই হামলায় অন্তত ১৩০০ জন ইজরায়েলি এবং বহু বিদেশি মারা যান। প্রায় ২০০ জনের মতো ইজরায়েলিকে অপহরণ করে গাজা ভূখণ্ডে নিয়ে যায় হামাসের জঙ্গিরা। অপহৃতদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী। এমনকী বহু শিশুকেও অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছে হামাস। হামাসের নৃশংস কাণ্ডকারখানার ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই ভাইরালও হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
এই আবহে ইজরায়েলের তরফে গাজায় অনবরত হামলা চালানো হচ্ছে। হামাসের সশস্ত্র গোষ্ঠীকে খতম করতে আকাশপথে বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই হামলা চালানো হচ্ছে। আর এই আবহে গাজা ভূখণ্ডে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে সেখানকার কবরস্থানগুলিতে আর জায়গা নেই। গাজার অনেক জায়গাতেই গণকবর খোঁড়া হচ্ছে। এই আবহে দেহ সংরক্ষণ করতে আইসক্রিম ট্রাক ব্যবহার করা হচ্ছে। এদিকে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন ইজরায়েলেরও অনেক সেনার। এই আবহে মধ্যপ্রাচ্যে পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে।