গতরাতে জোরালো ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল নেপাল সহ উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকা। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬.৪। আর অত্যন্ত শক্তিশালী এই ভূমিকম্পে এখনও পর্যন্ত নেপালে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ৭০ জনের। গতরাতের এই ভূমিকম্পে নেপাল ছাড়াও কেঁপে উঠেছিল দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, বিহার সহ ভারতের বহু জায়গা। তবে ভারতে এখনও পর্যন্ত কারও হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। তবে নেপালে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হচ্ছে, ভূমিকম্পের জেরে বহু জায়গার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এই আবহে রাত থেকেই শুরু হয় উদ্ধারকাজ। এখনও পর্যন্ত ৭০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, আরও বহু মানুষ এই ভূমিকম্পে আহত। তাদের অনেককেই হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। চলছে চিকিৎসা।
ভারতের জাতীয় ভূতাত্ত্বিক কেন্দ্রের তরফ থেকে জানানো হয়, শুক্রবার রাত ১১টা ৩২ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডে নেপালে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। কম্পনের উৎসস্থল নেপালের রাজধানী কাঠমাণ্ডু থেকে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে ৩৩১ কিমি দূরে অবস্থিত ছিল। ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়। এদিকে ভারত সীমান্ত থেকে ভূমিকম্পের উৎসস্থলটি ছিল কাছেই। এই আবহে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড সহ ভারতের বহু জায়গা সেই কম্পন অনুভূত হয়েছিল। উত্তরাখণ্ডের পিথোরাগঢ়ের পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বে ২০৮ কিমি, জোশীমঠের দক্ষিণ-পূর্বে ৩১৭ কিমি, উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের উত্তর ও উত্তর-পূর্বে ২৫৩ কিমি এবং উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যার উত্তরে ২২৭ কিমি দূরে অবস্থিত ছিল এই কম্পনের উৎসস্থল।
প্রসঙ্গত, গত এক মাসের মধ্যে নেপালে তিনটি জোরালো ভূমিকম্প হয়েছে। এর আগে গত ২০১৫ সালে নেপালে ভয়াবহ একটি ভূমিকম্প হয়েছিল। তাতে মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ৯ হাজার মানুষের। আহত হয়েছিলেন প্রায় ২২ হাজার মানুষ। গতরাতের ভূমিকম্প যেন নেপালের মনে ২০১৫ সালের সেই ভীতি ঢুকিয়ে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল এই ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছে। রাতেই জরুরি ভিত্তিতে শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ।
নেপালের রুকুম জেলায় বহু বাড়ি ভেঙে পড়েছে। এদিকে ভূমিকম্পের পরপর জাজারকোট গ্রামের স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছিল না বলে জানা যায়। ওই গ্রামে বহু মানুষ থাকেন। পরে রাতের দিকে জাজারকোটের জেলা আধিকারিক সুরেশ কুমার সুনার জানান, উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। বহু মানুষকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।