সম্প্রতি ইনফোসিস কর্তা নারায়ণ মূর্তি দেশের যুব সম্প্রদায়কে সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজের পরামর্শ দিয়েছেন। যা নিয়ে উত্তাল হয়েছে গোটা দেশ।
দিন কয়েক আগে ভারতীয় আইটি জায়ান্ট ইনফোসিসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এনআর নারায়ণ মূর্তি বলেন, গোটা বিশ্বে ভারতের উৎপাদনশীলতাই সবথেকে কম। আর উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করার জন্য দেশের যুব সম্প্রদায়কে প্রতি সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা করে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তাঁর এই বিবৃতিতে সরগরম হয়ে উঠেছে গোটা দেশ। এমনকী এটা আলোচনা এবং বিতর্কের জন্মও দিয়েছে।
তবে ইনফোসিস-কর্তা যে পরামর্শটা দিয়েছেন সেটা কি আদৌ সম্ভব? অর্থাৎ সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজ করা উচিত না কি অনুচিত? এই প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কী বলছেন? সেটাই শুনে নেওয়া যাক। নারায়ণ মূর্তির এই বিবৃতি প্রসঙ্গে আলোচনা করার জন্য লখনউয়ের অ্যাপোলোমেডিক্স সুপার স্পেশালিটি হসপিটালসের বিহেভিওরাল সায়েন্স এক্সপার্ট এমডি ডা. উমর মুশিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তাঁর কথায়, প্রতিটি মানুষের কাজের ক্ষমতা ভিন্ন। ফলে একজন যত ঘণ্টা কাজ করবেন, অন্য ব্যক্তি ঠিক তত ঘণ্টাই কাজ করতে পারবেন, এটা ভাবার কোনও কারণ নেই।
আরও পড়ুন-গ্রেফতার হলেন উরফি জাভেদ! টেনে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ, কারণটা কী? ভিডিও ভাইরাল হতেই তোলপাড়
ডা. উমর মুশিরের বক্তব্য, “আমাদের শারীরিক ভারসাম্য বজায় রাখাও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে সমান ভাবে মানসিক ভারসাম্য রক্ষা করাটাও অত্যন্ত জরুরি। এই পরিস্থিতিতে দেশের যুব সম্প্রদায় কিংবা যে কোনও মানুষের জন্য সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজ করা সম্ভব নয়। কাজের মাঝে বিরতি নেওয়াটাও কিন্তু সমান ভাবে জরুরি। আসলে শারীরিক এবং মানসিক ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য বিরতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এমন অনেক মানুষ রয়েছে, যারা সপ্তাহে হয়তো ৭০ ঘণ্টা কাজ করে। কিন্তু সকলেই যে এটা করতে পারবেন, সেটা বলা মুশকিল।”
আরও পড়ুন-ডায়েট ভুলে কব্জি ডুবিয়ে ‘আইবুড়োভাত’ খেলেন সন্দীপ্তা, বিয়ের আগে কতটা নিয়ম ভাঙছেন?
প্রতিটি ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের ধরন ভিন্ন:
ডা. উমর জানান, প্রতিটি ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের ধরন, কাজের চাপ এবং কর্মীদের সঙ্গে ব্যবহার ভিন্ন ভিন্ন হয়। যেমন- ডাক্তাররা দিনে ১২ ঘণ্টা করে কাজ করেন। রোগী দেখা থেকে শুরু করে সার্জারি করা – সমস্ত কিছুই করতে হয় তাঁদের। আবার বেসরকারি ইন্ডাস্ট্রির কর্মচারীদের তার থেকেও বেশি সময় ধরে কাজ করতে হয়। কারণ তাঁদের টার্গেট বেঁধে দেওয়া হয় এবং সময়ে সেই টার্গেট পূরণ করতে হয়। এমতাবস্থায় কর্মচারীরা কাজের চাপ অনুভব করেন। তবে এত ঘণ্টা করে কাজের পর বিভিন্ন রোগের শিকার হচ্ছে মানুষ।
আট ঘণ্টার ঘুম জরুরি:
ডা. উমরের পরামর্শ, প্রতিটি মানুষের জন্য প্রতিদিন আট ঘণ্টা করে ঘুম জরুরি। শরীরে এনার্জির সঞ্চার ঘটাতে বিশ্রাম নেওয়াটাও জরুরি। এই পরিস্থিতিতে আমরা যদি ৫-৮ ঘণ্টা ঘুমোই, তাহলে আমাদের শরীরে শক্তির সঞ্চার ঘটবে। আর আগের তুলনায় উৎপাদনশীলতার জন্য প্রস্তুত হবে শরীর। আসলে কাজের মাঝে বিশ্রাম না নিলে উৎপাদনশীলতা কমে যেতে পারে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Infosys