হিন্দুস্থান কেবলসের জমিতে কি হতে চলেছে কোনও নয়া শিল্প?

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গসহ পূর্ব ভারতে কিছুটা হলেও কমেছে ভারী শিল্প। বহু চটকল থেকে ভারী ইস্পাত কারখানা, গাড়ি নির্মাণ শিল্প; ক্রমশ বন্ধ হয়েছে বহু শিল্পই। তেমনই রূপনারায়ণপুরের রাষ্ট্রয়ত্ত কারখানা হিন্দুস্থান কেবলস বন্ধ হয়েছিল বছর ছয়েক আগেই। এবার সেই জমি পরিদর্শনে এলেন ভূমি সচিব স্মারকি মহাপাত্র৷ আর এই ঘটনা থেকেই গুঞ্জন, হিন্দুস্থান কেবলস-এর অব্যবহৃত জমিতে নির্মাণ হবে নতুন কোনও কারখানা বা শিল্প। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি এমন দাবিই জানিয়েছে। সিপিআইএমের শ্রমিক সংগঠন সিটু নতুন কোনও শিল্প এলে তাকে স্বাগত জানানোর কথাই জানিয়েছে। রাজ্যের অন্যতম বিরোধী দল বিজেপি অবশ্য বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চায়নি। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ভূমি সচিব অবশ্য কোনও মন্তব্য করেননি। বিশ্বকর্মা পুজোর ঠিক আগে বন্ধ কারখানার জমি পরিদর্শন কিছুটা হলেও আশা জাগিয়েছে এলাকাবাসীদের মনে।

যে কোনও বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানার পার্শ্ববর্তী অঞ্চল জুড়ে নেমে আসে অর্থনীতির আকাল। ২০১৭ সালে কারখানাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে রূপনারায়ণপুর, ডাবর, সামরিসহ আশেপাশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের অর্থনৈতিক অবস্থা ভেঙে পড়েছিল একেবারেই। বন্ধ কারখানার অব্যবহৃত এবং পরিত্যক্ত জমিতে নতুন শিল্প স্থাপনের জন্য দাবি জানাচ্ছিল এলাকাবাসীদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন, বণিক সংগঠনগুলি। বর্তমানে এলাকার অর্থনৈতিক অবস্থার কিছুটা বদল ঘটলেও নতুন শিল্প স্থাপনের দাবি জোড়ালোভাবেই রয়েছে এলাকাবাসীর।

প্রসঙ্গত ভূমি সচিবের এই বন্ধ কারখানা পরিদর্শনের পরে আইএলটিটিইউসির জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটক বলেন, ‘কেন্দ্র এখানে কারখানা গড়বে না। এই জমি রাজ্য সরকারের। তাই আমরা সেই জমি ফিরিয়ে নিয়ে সেখানে নতুন শিল্প গড়ার দাবি জানিয়েছে। আমাদের দাবি পূরণ করতে রাজ্য যে উদ্যোগী, ভূমি সচিবের জমি পরিদর্শনে তার স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে।’ তবে আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতির দাবি উড়িয়ে দিয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় জানান, ‘গত ১১ বছরে রাজ্যে একটিও শিল্প হয়নি। শিল্প সম্মেলনের নামে মোচ্ছব হয়েছে। জমি পরিদর্শন তেমনই একটা ভেলকি। আমরা এর মধ্যে কোনও শিল্প স্থাপনের ইঙ্গিত দেখছি না।’

তবে রাজ্যের অন্যতম বিরোধীদল সিপিআইএমের শ্রমিক সংগঠন সিটু বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন। সিটু’র জেলা সম্পাদক বংশগোপাল চৌধুরী জানান, হিন্দুস্থান কেবলসের জমি দখলের কথা আমরা রাজ্যকে জানিয়েছিলাম। কারখানার জমিতে কারখানা করার দাবি আমাদেরও। ভূমি সচিব পরিদর্শনের পরে সে বিষয়ে যদি রাজ্য ইঙ্গিত করে থাকে, তাহলে তো ভালোই। প্রসঙ্গত গত বছর তিনেক আগে এই জমিতে শিল্প স্থাপনের জন্য আগ্রহী হয়েছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। কিন্তু বাস্তবে তেমন কিছুই হয়নি। কারখানা বন্ধের বছর ৭ পর যদি এখন নতুন করে এই বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানার জমিতে শিল্প স্থাপন সম্ভব হয়, তাহলে অঞ্চলের অর্থনীতি তথা বাংলার অর্থনীতি কিছুটা হলেও এগিয়ে যাবে বলে মনে করছে ফেডারেশন অফ সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ৷ এলাকাবাসীও আশাবাদী নতুন কারখানা পেতে।

Advertisement

Malek

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।