কেন্দ্রের প্রায় সমস্ত সুপারিশ প্রত্যাখ্যান করে শনিবার থেকে রাজ্যে লাগু হল নতুন শিক্ষানীতি। এদিন গেজেট নোটিফিকেশন প্রকাশ করে জানানো হয়েছে শনিবার থেকেই কার্যকর হবে নতুন শিক্ষানীতি। এই শিক্ষানীতিতে তেমন কোনও ফেরবদল না থাকলেও বদল আসছে পরীক্ষা পদ্ধতিতে। শিক্ষক বদলির ক্ষেত্রেও বদল করা হয়েছে কিছু নিয়ম কানুন।
কেন্দ্রের শিক্ষানীতিতে গেরুয়াকরণের চেষ্টা হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে নিজেরাই শিক্ষানীতি বানিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তাতে নামমাত্র কেন্দ্রের সুপারিশ মানা হয়েছে। রাজ্যের শিক্ষাবিদরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে তৈরি করেছেন বাকি অংশ। শুক্রবার ১৬৩ পাতার শিক্ষানীতি প্রকাশ করে সরকার। শনিবার তার গেজেট নোটিফিকেশন জারি হয়েছে। এদিন থেকেই কার্যকর হয়েছে নতুন শিক্ষানীতি।
নতুন শিক্ষানীতি অনুসারে অঙ্গনওয়াড়ি শিক্ষার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। তার পর এক বছরের প্রাক প্রাথমিক ও চার বছর প্রাথমিক শ্রেণিতে পড়তে হবে ছাত্রছাত্রীদের। এর পর পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়াশুনো হবে সেমেস্টার পদ্ধতিতে। এই চার বছর বাংলা ও ইংরাজি ছাড়াও আরও একটি ভাষা পড়তে হবে ছাত্রছাত্রীদের। নবম – দশম নিয়ে হবে মাধ্যমিক। তবে সেক্ষেত্রেও জারি থাকবে সেমেস্টার পদ্ধতি। এর পর একাদশ – দ্বাদশ নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকও হবে সেমেস্টার পদ্ধতিতে। এক্ষেত্রে MCQ ধাঁচে হবে প্রশ্নপত্র। কেন্দ্রের শিক্ষানীতিতে দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা তুলে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছিল। তবে তা মানেনি রাজ্য সরকার। দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করলে স্কুলে স্কুলে হবে গ্রাজুয়েশন সেরিমনি।
স্নাতকের ক্ষেত্রের শুধুমাত্র ৪ বছরের অনার্স কোর্সের সুপারিশ গ্রহণ করেছে রাজ্য। প্রাত প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়ার যাবতীয় শিক্ষাগত অগ্রগতি বাংলার শিক্ষা পোর্টালের মাধ্যমে জমা থাকবে সরকারের কাছে।
রাজ্যের স্কুলগুলিতে শিক্ষকের সংকট মেটাতেও পদক্ষেপ করা হয়েছে শিক্ষানীতিতে। সেজন্য শিক্ষকদের চাকরিজীবনের একটি নির্দিষ্ট সময় গ্রামের স্কুলে পাঠদান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এজন্য শহরের স্কুলগুলি থেকে গ্রামের স্কুলে শিক্ষকদের বদলি করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
নতুন শিক্ষানীতিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। একই প্রতিষ্ঠানে নার্সিং ও প্যারামেডিক্যাল কোর্স চালুর সুপারিশ করা হয়েছে।