সিপিএম আবার শারদ–সভায় বুদ্ধ–শরণ করে, বিপুল ছাপা হচ্ছে বুদ্ধবাবুর দুটি বই

Advertisement

২০১১ সালে ক্ষমতা থেকে যাওয়ার পর আর আসেনি। তৎকালীন শ্বেতশুভ্র মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য আজ অসুস্থ। সম্প্রতি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়িতে চিকিৎসা চলছে। শরীর যেমন অশক্ত হয়ে পড়েছে তেমনই দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়েছে। তারপরও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কমিউনিস্ট নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের দু’টি বই নতুন করে বিপুল সংখ্যায় ছাপতে চলেছে সিপিএম। এবারের শারদ উৎসব উপলক্ষ্যে দলীয় প্রকাশনা সংস্থা ‘ন্যাশনাল বুক এজেন্সি’ ওই দুটি বই ছাপতে চলেছে বলে সূত্রের খবর। শারদ উৎসবে বইয়ের স্টল দেয় সিপিএম। সেই দেখা যাবে ওই দুটি বই।

এদিকে ২০১৮ সালে অসুস্থ হয়ে বাড়িতে থাকেন বুদ্ধবাবু। ওই বছর দুর্গাপুজোতেই তাঁর লেখা ‘নাৎসি জার্মানির জন্ম ও মৃত্যু’ প্রকাশ করেছিল ন্যাশনাল বুক এজেন্সি (‌এনবিএ)‌। তা দারুণ বিক্রি হয়েছিল। ২০১৯ সালে শারদীয়ায় আবার বুদ্ধদেবের নতুন বই প্রকাশ করে এনবিএ। ‘স্বর্গের নীচে মহাবিশৃঙ্খলা’ বইটি দেদার কাটতি হয়েছিল। সেই দু’টি বইই এবার নতুন করে ছাপাতে চলেছে এনবিএ। ন্যাশানাল বুক এজেন্সির কর্ণধার অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ওই দু’টি বইয়ের চাহিদা থাকবেই। তাই আমরা বই দু’টির পুনর্মুদ্রণ করছি।’ দেদার ছাপা হচ্ছে বলে খবর। সিপিএম সূত্রে খবর, দু’টি বই মিলিয়ে ৩৫ হাজারের বেশি কপি ছাপা হবে।

অন্যদিকে বুদ্ধবাবুর বই বহু জায়গায় প্রশংসনীয়। তাঁর মেধা–পাণ্ডিত্য নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের লেখা দু’টি বই ‘চিলিতে গোপনে’ ও ‘বিপন্ন জাহাজে এক নাবিকের গল্প’ বাংলায় অনুবাদ করে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। এমনকী বাংলা থেকে বামফ্রন্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর লেখা দু’টি বই ‘ফিরে দেখা’ এবং ‘ফিরে দেখা ২’ চর্চিত হয়েছিল সব মহলে। যখন জ্যোতি বসুর মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন বুদ্ধবাবু, তখন তাঁর লেখা নাটক ‘দুঃসময়’ রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় করেছিল। তাই এখনও নতুন মোড়কে সিপিএম গড়ে উঠলেও সেই বুদ্ধং শরণং করতে হচ্ছে।

আরও পড়ুন:‌ বাংলায় ‘ডেটা রিসার্চ সেন্টার’ চালুর নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী, বাড়বে কি কর্মসংস্থান?‌

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ সিপিএম এবার দুর্গাপুজোয় নতুন কিছু বইও প্রকাশ করছে। আর তা দিয়েই করা হবে জনসংযোগ। লাল কাপড়ে মোড়া স্টলে দেখা মিলবে একাধিক বুদ্ধবাবুর বইয়ের। কাস্তে–হাতুড়ি–তারা চিহ্নে ঢেকে যাবে ওই স্টল। নতুন প্রজন্মের কমরেড থেকে পক্ককেশধারীরা সেখানে উপস্থিত থাকবেন। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিপিএম নেতা বলেন, ‘নতুন প্রজন্মকে তো জানাতে হবে বাম রাজনীতির ইতিহাস। এটার কোনও প্রচেষ্টা আগে তেমন ছিল না। এবার তা করা হচ্ছে। দলে অন্তর্ভুক্ত হওয়া নতুনদের মধ্যে রাজনৈতিক পড়াশোনা করার ইচ্ছা আছে।’‌ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বই দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে সিপিএম বলে মনে করছেন অনেকে।

Advertisement

Malek

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।