বিশ্ববিদ্যালয়ের রাশ কার হাতে থাকবে? শিক্ষক দিবসের দিন বাংলার এই প্রশ্নটাই বড় হয়ে উঠল। সেই সঙ্গেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ইস্যুতে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত একেবারে চরমে উঠল।
শিক্ষা ব্যবস্থায় রাজ্যপাল যেভাবে হস্তক্ষেপ করেছেন তা নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ রাজ্য়ের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তবে রাজ্যপালের এই হস্তক্ষেপ যে রাজ্য কোনওভাবেই মানবে না সেটাও কার্যত পরিষ্কার করে দিয়েছে রাজ্যের শিক্ষাদফতর। এদিকে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারদের বিকাশ ভবনে ডাকা হয়েছে। সেই মোতাবেক তাদের চিঠি পাঠানো হয়েছে। আর্থিক সংক্রান্ত ব্যাপারে তাঁদের বক্তব্য জানতে চাওয়া হবে বলে খবর।
তবে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপাল উপাচার্য নিয়োগ করেছে। এর জেরে কার্যত বেকায়দায় পড়েছে রাজ্য। এভাবে রাজ্যপাল ভিসি নিয়োগ করলে আখেরে রাজ্যের হাত থেকে রাশ চলে যেতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে সেক্ষেত্রে রাজ্যপালের নির্দেশটাই বড় করে দেখা দেবে। আচার্যই মুখ্য হয়ে উঠতে পারেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। এরপরই এনিয়ে টেনশনে পড়ে শিক্ষাদফতর।
এদিকে এদিনও এই ঘটনায় ক্ষোভ চেপে রাখেননি খোদ মুখ্য়মন্ত্রী। তাঁর মতে কেরলের আধিকারিক, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি তাঁদেরকে উপাচার্য পদে বসানো হয়েছে। সেই সঙ্গে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর তোপ, ‘উনি( রাজ্যপাল) একটাও বিল ফের পাঠান না। সব বিল আটকে রেখে দেন। এটা ওনার অধিকারে নেই। সংবিধান বলেছে, রাজ্য রাজ্যপালকে বিল পাঠালে সেটা ফেরত পাঠাতে হয়। আর একবারের জায়গায় ২ বার পাঠালে ওটা আইন হয়ে যায়। আশা করি এটা আমি ভুল বলিনি। আমি ব্রাত্য আর মণীষকে বলব, প্লিজ টেক কেয়ার। আমাদের এই ব্যাটেলটা ফাইট করতে হবে খুব ভালো ভাবে। আর যদি মনে হয় কারও অধিকার কেউ কেড়ে নিয়ে ফেডারেলিজমকে আঘাত করছে। আমি কিন্তু বাধ্য হব গভর্নর হাউজের সামনে ধরনা দিতে। আমি এডুকেশন সিস্টেমকে কোলাপস করতে দেব না।’
ব্রাত্য বসুকে মমতা বলেছিলেন টেক কেয়ার। যুদ্ধটা ভালোভাবে লড়তে চান মুখ্যমন্ত্রী। আর কার্যত ময়দানে নেমে পড়ল শিক্ষাদফতর। এবার একের পর এক রেজিস্ট্রারকে ডেকে পাঠিয়ে শিক্ষাদফতর তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করতে চায়। তবে এবার নতুন নিয়োগ হওয়া ভিসিরা রেজিস্ট্রারদের আদৌ সেই মিটিংয়ে যোগ দেওয়ার অনুমতি দেন কি না সেটাও দেখার।
তবে মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, ‘আপনি ( রাজ্যপাল) যদি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে হস্তক্ষেপ করেন, আর কোনও কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় যদি আপনার কথা শুনে চলে আমি কিন্তু অর্থনৈতিক বাধা তৈরি করব। এখানে টিট ফর ট্যাট। নো কম্প্রোমাইজ। দেখি আপনি কোন কলেজ, কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাইনে দেন!’