গতকাল গভীর রাতেই কর্ণাটক এবং দিল্লির রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছিল। বিভিন্ন রিপোর্টে দাবিও করা হয়েছিল। অবশেষে আনুষ্ঠানিক ভাবে আজ দুপুর ১২টা নাগাদ কংগ্রেসের তরফে ঘোষণা করা হল কর্ণাটকের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রীর নাম। দলের সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল জানিয়ে দেন যে সিদ্দারামাইয়া আগামী শনিবার কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণ করবেন। তাঁর ডেপুটি হিসেবে সেদিন শপথ নেবেন কর্ণাটকের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডিকে শিবকুমার। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত শিবকুার কর্ণাটক প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতিও থাকবেন বলে জানানো হয়। ১৩৫টি আসনে জিতে কর্ণাটকে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেও দুই হেভিওয়েট নেতার ‘আকাঙ্খার’ জেরে অস্বস্তিতে পড়েছিল হাত শিবির। কর্ণাটক প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডিকে শিবকুমার এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই দিল্লিতে ঘাঁটি গেড়ে বসেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত গতরাতে বরফ গলে।
জনা গিয়েছে, গতকাল গভীর রাতে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রিত্বের ‘ফর্মুলা’ চূড়ান্ত করতে পেরেছেন মল্লিকার্জুন খাড়গে। বিগত তিনদিন ধরে সিদ্দারামাইয়া দিল্লিতে ছিলেন। শিবকুমার রাজধানীতে ছিলেন গত ২ দিন ধরে। মল্লিকার্জুন খাড়গে ছাড়াও এই দুই নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেন। এদিকে কর্ণাটকের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রণদীপ সিং সুরজেওয়ালাও এই দুই নেতার সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন। খাড়গের সঙ্গেও বৈঠক করেন সুরজেওয়ালা। অবশেষে গতকাল সোনিয়া গান্ধী ময়দানে নামেন এবং ডিকে শিবকুমারকে বোঝান। তাতে বরফ গলে। উপমুখ্যমন্ত্রী পদ গ্রহণে সম্মত হন শিবকুমার। এর আগে ডিকে শিবকুমার জোর গলায় দাবি জানিয়ে এসেছিলেন যে তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রী করতে হবে, না হলে তিনি কোনও পদই গ্রহণ করবেন না। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁকে ‘আড়াই বছরের ফর্মুলায়’ রাজি করানো গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে রাজস্থান, পঞ্জাব, ছত্তিশগড়ে মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। দাবি করা হয়, ছত্তিশগড়েও ভূপেশ বাঘেল এবং টিএস সিং দেও-কে ‘আড়াই বছরের ফর্মুলা’য় রাজি করানো হয়েছিল আগেরবার। তবে শেষ পর্যন্ত টিএস সিং দেও-কে আর মুখ্যমন্ত্রী করা হয়নি। এই নিয়ে দিল্লিতে বহুবার বৈঠক করেছিলেন টিএস সিং দেও। তবে ভূপেশ বাঘেল শেষ পর্যন্ত নিজের গদি ধরে রেখেছিলেন। এদিকে ভোটমুখী রাজস্থানে অশোক গেহলট বনাম সচিন পাইলটের লড়াই এখনও জারি রয়েছে। এছাড়া পঞ্জাব এবং মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে সরকার হারাতে হয়েছে কংগ্রেসকে। পঞ্জাবে দল ছন্নছাড়া হয়ে পড়ায় ভোটে ভরাডুবি হয়। আর মধ্যপ্রদেশে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলে মাঝপথেই কংগ্রেস সরকার পড়ে যায়। তবে কর্ণাটকে যাতেই সেই একই পরিস্থিতি তৈরি না হয় তার জন্য সবার সঙ্গে আলোচনা করে সহমতের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পথে হেঁটেছেন খাড়গে।