গত নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য মণিপুরে সরকার গঠন করেছিল বিজেপি। তবে দ্বিতীয় দফায় একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে গেরুয়া শিবিরকে। অন্তর্দ্বন্দ্ব থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি বিধায়কদের অনাস্থা… আর এখন দুই জাতির মধ্যে রক্তক্ষয়ী হিংসা। যার জেরে রাজ্যে মোতায়েন করা হয়েছে সেনা। এই আবহে কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর দাবি তুললেন, মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা উচিত। শশী থারুর অভিযোগ করেন, নির্বাচনের মাত্র একবছর পরই মণিপুরী ভোটাররা মনে করছেন যে বিজেপি তাঁদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।
শশী থারুর টুইট বার্তায় লেখেন, ‘মণিপুরের হিংসা অব্যাহত। এই আবহে সকল ভারতীয়র এই প্রশ্ন করা উচিত, যে ভালো প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, সেটা কোথায় গেল? মণিপুরের ভোটাররা তাদের রাজ্যে বিজেপিকে ক্ষমতায় বসানোর মাত্র এক বছর পরই প্রতারিত বোধ করছেন। রাষ্ট্রপতি শাসনের সময় এসেছে। যে কাজ করার জন্য বিজেপি সেখানে নির্বাচিত হয়েছিল, তা এই সরকার ঠিক ভাবে করতে পারছে না।’
বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই জাতিগত হিংসার সাক্ষী থেকেছে মণিপুর। এখন পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি পরিস্থিতি। বর্তমানে ভারতীয় সেনা এবং অসম রাইফেলসের প্রায় ১০ হাজার সেনা জওয়ান মোতায়েন রয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১৩ হাজার জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চূড়াচাঁদপুর, মোরে, কাকচিং এবং কাংপোকপি জেলা থেকেই অধিকাংশ মানুষকে সরানো হয়েছে। এদিকে হিংসায় এখও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৫৪ জনের। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইম্ফল পূর্ব এবং পশ্চিম জেলাগুলি বিক্ষিপ্তভাবে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সঙ্গে অবরোধেরও চেষ্টা দেখা গিয়েছে। তবে সামরিক বাহিনীর জওয়ানরা শক্ত হাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছেন।
উল্লেখ্য, ইম্ফাল উপত্যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হল মৈতেই জনজাতি। তবে তারা সম্প্রতি দাবি তুলেছে যে তাদের তফসিলি উপজাতির তকমা দিতে হবে। তাদের এই দাবির বিরোধ জানিয়েছে স্থানীয় আদিবাসীরা। এই আবহে মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন একটি মিছিলের আয়োজন করেছিল বুধবার। সেই মিছিল ঘিরেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে চূড়াচাঁদপুর জেলায়। এদিকে তফশিলি উপজাতির ইস্যুর পাশাপাশি সংরক্ষিত জমি এবং সার্ভে নিয়েও উত্তাপ ছড়িয়েছে। এই আবহে গত মাসে এই চূড়াচাঁদপুর জেলাতেই মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের সভাস্থলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডারস ফোরামের সদস্যরা। এদিকে এই জেলা থেকে আদিবাসী বনাম মৈতেইদের এই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য জেলাতেও।