ভারতীয় ক্রিকেট যখন গড়াপেটার অন্ধকারে কালিমালিপ্ত, ঠিক তখনই সেই অন্ধকার থেকে ভারতীয় দলকে তুলে আনতে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে। এরপর ভারতীয় ক্রিকেটে ঠিক কতটা পরিবর্তন হয়েছে তা কারোর অজানা নয়। একেবারে তারুণ্যে ভরা দলকে নিয়ে এগিয়ে যান মরাহাজ। তাঁর হাত ধরেই অনেক ক্রিকেটারের অভিষেক হয় জাতীয় দলে। তাদের মধ্যে অবশ্যই থাকবেন বীরেন্দ্র সেহওয়াগ, যুবরাজ সিং, মহম্মদ কাইফ, ইরফান পাঠান এবং মহেন্দ্র সিং ধোনির মতো অনেক ক্রিকেটারের।
সেই তারুণ্যে ভরা দল নিয়েই বিদেশের মাটিতে চোখে চোখ রেখে লড়াই করতে দেখা গিয়েছে ভারতীয় দলকে। ভারতীয় ক্রিকেটে নবজাগরন বোধহয় সেখান থেকে শুরু হয়েছিল। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের হাতে তৈরি করা দলই বিশ্ব মানচিত্রে ভারতীয় ক্রিকেট অন্য জায়গা করে নিয়েছে। আর সেই সময় ভারতীয় ক্রিকেটে অভিষেক হয় ইরফান পাঠানের। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রথম একাদশে পাঠানের নাম থাকত।
সেই সময় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের হাত ধরে অভিষেক হওয়া অনেক ক্রিকেটারের মুখেই তৎকালীন অধিনায়কের প্রশংসা শোনা যায়। বীরেন্দ্র সেহওয়াগ, ইশান্ত শর্মা, যুবরাজ সিং সহ অনেক ক্রিকেটারকেই দাদার প্রশংসা করতে দেখা গিয়েছে। বাদ যাননি ইরফান পাঠানও। কিন্তু এবার এই প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার তৎকালীন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন। চাঞ্চল্যকর অভিযোগ এনেছেন প্রাক্তন এই ক্রিকেটার। ২০০৩-০৪ মরশুমে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তাঁকে নাকি দলে রাখতে চাননি সৌরভ। এমনটাই দাবি করেছেন পাঠান। আইপিএল চলাকালীন স্টার স্পোর্টসে ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় পাঠান জানিয়েছেন, ‘২০০৩-০৪ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় আমাকে দলে রাখতে চায়নি।’
কেন মরাহাজ দলে তাঁকে নিতে চাননি তাও খোলসা করেছেন পাঠান। সেই অনুষ্ঠানেই পাঠান জানান, ‘২০০৩-০৪ সালে যখন আমাদের অস্ট্রেলিয়া সফর ছিল, তখন আমার বয়স মাত্র ১৯ বছর। তখন দাদি ভেবেছিল আমার বয়স যেহেতু অনেকটাই কম, তাই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলার চ্যালেঞ্জটা নিতে পারব না।’
তবে সেই অস্ট্রেলিয়া সফরে তিনি দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেন। ২ ম্য়াচ খেলে ৪ উইকেট তুলে নেন পাঠান। আর সেই সফরের সিডনি ম্যাচে তিন উইতেট নেন তিনি। ১৯ বছর বয়সী তরুণতে খুঁজে পায় ভারতীয় ক্রিকেট। সিডনি ম্যাচে তিন উইকেট নেওয়ার পর পাঠানের কাছে এসে ক্ষমাও চান সৌরভ। পাঠান বলেন, ‘দাদি আমার কাছে এসে বলে, তাঁর ধারণা ভূল ছিল। যা সত্যিই আমাকে অবাক করেছে, কারণ খুব কমই অধিনায়ক আছে, যারা দল নির্বাচন নিয়ে কথা বলে এবং তারপরে তাঁর ভুল স্বীকারও করে।’