শনিবার একাধিক মিডিয়া রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল গুরুতর অসুস্থ শ্যাম বেনেগাল। বর্ষীয়ান পরিচালকের দু’টি কিডনিই কাজ করছে না, বাড়িতেই চলছে ডায়ালেসিস। এই ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে হিন্দুস্তান টাইমসের তরফে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল পরিচালকের সঙ্গে, ফোন তোলেন বেনেগালের কন্যা পিয়া বেনেগাল। বেনেগাল-কন্যা বলেন, ‘এই খবর ভুল এবং অসত্য়’।
কস্টিউম ডিজাইনার পিয়া বেনেগাল জানান, ‘অনলাইনে যা কিছু দাবি করা হয়েছে সবটাই ভুল’। শ্যাম বেনেগাল কেমন আছেন এই প্রশ্ন জানতে চাওয়া হলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘সেটা জানার আপনার কোনও দরকার নেই, কিছুদিনের মধ্যেই উনি একদম সুস্থ হয়ে যাবেন, গুজবে কান দেবেন না’। পিয়া জোর দিয়ে বলেন, ‘এটা জানিয়ে দিন উনি সুস্থ আছেন’। পিয়ার কথায়, ‘চিকিৎসকরা বাড়িতে আসছেন! বাড়িতে ওঁর ডায়ালিসিস চলছে। বাবা এতটাই অসুস্থ যে বাড়ি থেকে বেরোতে পারছেন না, এগুলো সব ভুয়ো খবর।’
এরপর পিয়া যোগ করেন, ‘এই বয়সে যতটা সুস্থ থাকা যায় উনি রয়েছে। ওঁনার ৮৮ বছর বয়স, এটা অবসরের সময়, আরাম করবার সময়। আপনাদের কি মনে হয় না?’ সবশেষে পিয়া জানান, ‘শীঘ্রই আপনারা সবটা জানতে পারবেন’।
শ্য়াম বেনেগাল ঘনিষ্ঠ একজন এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, গত কয়েক মাস ধরেই পরিচালকের শরীর একদম ভালো যাচ্ছে না। আপতত বাড়িতেই শয্য়াশায়ী পরিচালক। বার্ধক্যজনিত নানান সমস্যা তো ছিলই তবে কিডনি অকেজো হয়ে পড়ায় গত কয়েকদিনে শ্যাম বেনেগালের পরিস্থিতি অত্য়ন্ত বিগড়ে গিয়েছে।
বয়স বাড়লেও ফিল্মমেকিং নিয়ে শ্যাম বেনেগালের ভালোবাসায় ছেদ পড়েনি একবিন্দু। অসুস্থতার মধ্যেও নিজের চলতি প্রোজেক্ট ‘মুজিব: দ্য মেকিং অফ আ নেশন’ নিয়ে ভাবনাচিন্তা চালিয়ে যাচ্ছেন পরিচালক।
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিক এই ছবি। ছবির শ্যুটিং পর্ব ইতিমধ্যে মিটেছে। ছবিতে শেখ মুজিবুর রহমানের চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশি অভিনেতা আরিফিন শুভ। তরুণী শেখ হাসিনা হিসাবে দেখা মিলবে নুসরাত ফারিয়ার। মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে এই ছবি।
এই মূহূর্তে ‘ফেডেরেশন অফ ফিল্মস সোসাইটিজ় অফ ইন্ডিয়া’র সভাপতি শ্যাম বেনেগাল। পাঁচ দশক দীর্ঘ তাঁর ফিল্মি কেরিয়ার। ১৯৭৪ সালে ‘অঙ্কুর’ ছবির সঙ্গে ফিল্মমেকিং-এ হাতে খড়ি তাঁর। ‘জুনুন’, ‘মন্থন’, ‘আরোহণ’-এর মতো জাতীয় পুরস্কার জয়ী ছবির পরিচালক তিনি। ভারত সরকারের তরফ থেকে পদ্মশ্রী (১৯৭৬), ‘পদ্মভূষণ’ (১৯৯১) সম্মানে ভূষিত হয়েছেন শ্যাম বেনেগাল। ২০০৫ সালে চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ সম্মান ‘দাদাসাহেব ফালকে’তে ভূষিত হন তিনি। সুভাষচন্দ্র বসুর বায়োপিক ‘বোস: দ্য ফরগটন হিরো’ পরিচালনা করেছেন শ্যাম বেনেগাল।