বাহা বঙ্গা বাহা পরব শুরু
প্রথা মাফিক দোল পূর্ণিমার পরে থেকে শহুরে সাঁওতাল পল্লী চম্পাকিয়ারীতে তিন দিনের ‘বাহা বঙ্গা বাহা পরব’ শুরু হয়েছে। আদিবাসী প্রথা অনুযায়ী প্রথম দিন উম্ মাহা অর্থাৎ শুভ সূচনা, দ্বিতীয় দিন সারদি মাহা মানে মূল পূজানুষ্ঠান আর উৎসবের তৃতীয় অর্থাৎ শেষ দিনে জালে মাহা বা বাহা বাস্কে। নিজেদের ঐতিহ্য আর পরম্পরা রক্ষায় নবপ্রজন্মের আগ্রহ বাড়ছে। তাদের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিতি ও অংশগ্রহণই সে কথা প্রমাণ করে। কলেজ ছাত্রী শিলি মুর্ম্মু বলেন, আমাদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা এই শহুরে পরিবেশেই। তবে আমরা আমাদের নিজস্ব ঘরাণার নাচ, গান যেমন শিখেছি। পূজা পার্বণ এসব দেখে আসছি। বছরের এই বিশেষ দিন গুলোতে সকলে মিলে আনন্দোৎসবে তারা মেতে ওঠেন বলে তিনি জানান।

তিনদিনে শুধুই আনন্দ
খাতড়া থেকে আসা শর্মিলা মাণ্ডি থেকে স্থানীয় বাসিন্দা সোনামনি মুর্ম্মুরা চিরাচরিত ঐতিহ্য আর পরম্পরা রক্ষা করে চলেছি আমরা। বাহা পরবের তিন দিন সকলে মিলে প্রচুর আনন্দ করেন বলে তাঁরা জানান।

শাল আর মহুয়া ফুল দিয়ে মারাং বুরুর পুজো
চম্পাকিয়ারী গ্রামের ‘মাঝি বাবা’ ভীম চন্দ্র মুর্ম্মু বলেন, আদিবাসী সমাজের সবথেকে বড় উৎসব বাহা পরব। অমাবস্যার পর আকাশে চাঁদ দেখা পাওয়ার পর তিথি মেনে শাল আর মহুয়া ফুল দিয়ে মারাং বুরুর পুজো করা হয় বলে তিনি জানান।

বাহা পরব শেষে ফুল-ফল-পাতার ব্যবহার
এই বাহা পরবের ব্যাখ্যা করে চম্পাকিয়ারী গ্রামের নাইকি বাবা মলিন্দ হাঁসদা বলেন, ‘বাহা’ শব্দের বাংলা অর্থ ফুল। বসন্তের সূচনায় এই উৎসব পালিত হয়। শাল, মহুয়া সহ সমস্ত গাছে নতুন ফুল, ফল, পাতা হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত আরাধ্য দেবতা ‘মারাংবুরু’কে এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ফুল সমর্পণ করা হচ্ছে ততদিন আমাদের সম্প্রদায়ের কেউ কোন ফুল, ফল এমনকি নতুন পাতা পর্যন্ত ব্যবহার করবে না। বাহা পরব শেষে সবাই নতুন ফুল, ফল, পাতা ব্যবহার করতে পারবে বলে তিনি জানান।