পাহাড়ে গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন শুরুর পথে!
২০১৭ সালে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে পাহাড় উত্তপ্ত করার নেপথ্যে ছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা প্রধান বিমল গুরুং। তাঁর সঙ্গে তখন ছিলেন বিনয় তামাং। এখন পাহাড়ে গোর্খাল্যান্ড দাবিতে বনধ ডেকে উত্তপ্ত করার প্রধান কারিগর সেই বিনয় তামাংই। অবশ্য পাহাড়ে গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনে সুড়সুড়ি দেওয়ার মূলে রয়েছেন গুরুংই।

পাহাড়ে তৃণমূলের তুরুপের তাস থেকে আন্দোলনে
২০১৭ সালে পাহাড়কে উত্তপ্ত করায় বিমল গুরুংকে শায়েস্তা করতে বিনয় তামাংকে কাছে টেনে মাস্টারস্ট্রোক দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর বিনয় তামাং হয়ে উঠেছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান। গুরুংকে সাইড হয়ে যেতে হয়েছিল সেই সময়ে। তারপর পাহাড়ে তৃণমূলের তুরুপের তাস হয়ে উঠেছিলেন তামাং।

গোর্খাল্যান্ডকে জীবনের ধ্রুবতারা করলেন বিনয় তামাং
কিন্তু ফের বিমল গুরুং ফিরে আসায় পাহাড়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চায় আড়াআড়ি বিভাজন হয়ে গিয়েছিল। ফলে বিনয় তামাং ২০২১-এর নির্বাচনের পর যোগ দেন তৃণমূলে। কিন্তু স্বল্প দিনেই সেই গাঁটছড়া ছিন্ন হয়ে গেল, বিনয় তামাং ফের তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দেবে গোর্খাল্যান্ডকে জীবনের ধ্রুবতারা করলেন।

বিনয় তামাং-অজয় এডওয়ার্ড আসরে, অপেক্ষা গুরুং
সম্প্রতি তৃণমূল বিধানসভায় বঙ্গভঙ্গ বিরোধী বিল এনেছে। তার ফলেই পাহাড়ে গোর্খাল্যান্ড সমর্থনকারীরা ক্ষেপেছেন। তাঁরা তৃণমূল সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে পাহাড় বনধরে ডাক দিয়েছেন। গোর্খাল্যান্ডের দাবি তোলা বিনয় তামাং, অজয় এডওয়ার্ড-রা ধরনায় বসেছেন। এখনও সরাসরি আসরে নামেননি বিমল গুরুং।

পাহাড়ে ফের একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে
এই অবস্থায় পাহাড়ে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে যে, যেকোনো মূহূর্তে উত্তেজনা তৈরি হতে পারে। ফের অচল হয়ে যেতে পারে দার্জিলিং। পাহাড় পর্যটনে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। মাধ্যমিকের প্রথম দিনেই পাহাড় বনধ শুরু। সেদিনই বোঝা যাবে পাহাড়ে ফের অশান্তি ছড়ায়, নাকি শান্তিপূর্ণ অবস্থাতেই শেষ হয় পাহাড়ের আন্দোলন?

পাহাড়কে দমন করার চ্যালেঞ্জ এখন মমতার সামনে
বিনয় তামাং-রা পাহাড়ে বনধের সমর্থনে অনড়। এই অবস্থায় তৃণমূল সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কীভাবে এই পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণ করেন, সেটাই দেখার। দু-এক মাসের মধ্যেই পঞ্চায়েত নির্বাচন, তারপর ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন। ফলে পাহাড়কে দমন করার চ্যালেঞ্জ এখন মমতার সামনে। সেই চ্যালেঞ্জকে শক্ত হাতেই গ্রহণ করেছেন মমতা।

পাহাড়কে উত্তপ্ত করে রাজ্যকে বিব্রত করার খেলা
তবে বিনয় তামাংয়ের বার্তা ভাবাচ্ছে। তিনি সরাসরি বিবৃতি প্রকাশ করে জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গ থেকে আলাদা হতে চাই। তাই একদিনের বনধেই যে তারা সরে দাঁড়াবেন, সেই ইঙ্গিত মিলছে না বরং দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলনের রাস্তায় হাঁটতে পারে তারা। পাহাড়কে উত্তপ্ত করে রাজ্যকে বিব্রত করার খেলায় বিজেপি যে ফায়দা তুলতে চাইবে, তা মনে করছে রাজনৈতিক মহলও।

বিনয় তামাং বিবৃতিতে গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে যুদ্ধ শুরুর বার্তা
বিনয় তামাং তাঁর বিবৃতিতে জানিয়েছেন, আমাদের ভারতীয় সংবিধানের প্রতি পূর্ণ আস্থা আছে. আমি মনে করি না সংবিধানের উপরে কেউ আছে। রাজ্য বিধানসভায় যে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী প্রস্তাব পাস হয়েছে তা সংবিধানকে চ্যালেঞ্জ করছে। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এই প্রসঙ্গে তিনি উত্তরবঙ্গের মানুষকে সরব হতে বলেছেন। আর বিন তামাংয়ের এই বিবৃতির সমর্থনে যে বিমল গুরুংও আছেন, তা নিশ্চিত।