অভিনেতা নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকির দাম্পত্য কলহ চরমে! দ্বিতীয় স্ত্রী সঙ্গে অভিনেতার সম্পর্ক বেশ কয়েক বছরই তলানিতে করোনা পরবর্তী সময়ে সেই পরিস্থিতির খানিক উন্নতি হলেও আবারও স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন আলিয়া ওরফে জেয়নব ওরফে অঞ্জনা কিশোর পাণ্ডে। অভিনেতা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন আলিয়া, এমনকী সাতদিন তাঁকে না-খেতে দিয়ে গৃহবন্দি করে রাখার অভিযোগও আনেন নওয়াজ পত্নী। গোটা বিষয় নিয়ে আইনি লড়াই জারি, এর মাঝেই নওয়াজের আইনজীবী নদিম জাফর জৈদি এক সাংবাদিক বৈঠক করেন।
দিল্লিতে অনুষ্ঠিত এই সাংবাদিক বৈঠকে নওয়াজের আইনজীবীর সঙ্গে ছিলেন রাষ্ট্রীয় হিন্দু-মুসলিম একতা মঞ্চের সভাপতি রিহান খান। এদিন নওয়াজের আইনজীবীর বিস্ফোরক দাবি আলিয়া নাকি এখনও তাঁর প্রথম স্বামী বিনয় ভার্গবের বিবাহিতা স্ত্রী। ২০১১ সালে বিয়ে হয়েছিল নওয়াজউদ্দিন ও আলিয়ার। তাঁদের দুই সন্তান- সোহরা ও ইয়ানি। জানা গিয়েছে পারিবারিক অশান্তির জেরে নওয়াজ আপতত তাঁর মুম্বইয়ের বাংলো ‘নবাব’ ছেড়ে হোটেলে দিন কাটাচ্ছেন। সম্পত্তিগত বিবাদ চরমে ওঠায় নওয়াজের মা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন আলিয়ার বিরুদ্ধে।
নওয়াজের আইনজীবী জানান, ২০০১ সালে ক্লাস এইট ফেল আলিয়া ওরফে অঞ্জলি কুমারি বিয়ে করেন বিনয় ভার্গবকে। এরপর মুম্বই এসে অঞ্জনা পাণ্ডে নামে বসবাস করতেন আলিয়া। এরপর অঞ্জনা আনন্দ নাম ধারণ করেন তিনি। এরপর ইসলাম গ্রহণ করে জয়নব নাম গ্রহণ করে নওয়াজকে বিয়ে করেন (২০১১), তবে মাস কয়েকের মধ্যেই ডিভোর্স দিয়ে দেন। এরপর যখন নওয়াজের কেরিয়ারে মধ্যগগণে তখন ফের আলিয়া হয়ে তাঁর জীবনে ফিরে আসে অঞ্জলি ওরফে অঞ্জনা ওরফে জয়নব। ২০২০ সালে নওয়াজকে ডিভোর্সের নোটিশ পাঠিয়েছিলেন আলিয়া, যা একেবারে অর্থহীন। কারণ দুজনে আগেই আলাদা হয়েছেন’।
তিনি আরও বলেন, আলিয়া নিজের জন্ম তারিখ জাল করেছেন। আইনজীবী বলেন, ‘অঞ্জনা ভালোবাসে আরও একজনকে বিয়ে করেছিল। রাহুল নামের ওই ব্যক্তির সঙ্গে ২০০৮-০৯ সালে বিয়ে হয়। তাঁরা একসঙ্গে মুম্বইয়ের গোরেগাঁও-তে থাকত। অঞ্জনার স্বপ্ন ছিল সফল ব্যক্তি হওয়ার, বোন অর্চনা পাণ্ডের সঙ্গে মিলে সেই প্ল্য়ানিং করে সে। মুম্বইয়ে নিজের মতো করে থাকছিল অঞ্জনা, অন্যদিকে অর্চনা জব্বলপুরে বিয়ে করে বিনয় ভার্গবকে (দিদি অঞ্জনার প্রথম স্বামী)। ওদিকে অর্চনা আগেই রাজকুমার শুক্লাকে বিয়ে করেছিলেন এবং তাঁদের বিচ্ছেদ হয়নি। রেলওয়ে বিভাগে কর্মরত বিনয় ভার্গবের স্ত্রী হিসাবে উল্লেখ রয়েছে অঞ্জনার, তা তথ্য ঘেঁটে দেখা গিয়েছে। এরা তিনজনে (অঞ্জনা, অর্চনা এবং বিনয়) রেলওয়ের সঙ্গেও প্রতারণা করে ফায়দা তুলেছে’।
গত মাসেই আলিয়ার আইনজীবী রিজওয়ান সিদ্দিকি বলেন, ‘আমার মক্কেল আলিয়া সিদ্দিকিকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার জন্য যা যা করা দরকার সবটাই নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি এবং তাঁর পরিবারের লোকজন করেছেন। তাঁরা আমার মক্কেলের নামে একটি ফৌজদারী মামলা পর্যন্ত করেছেন। পুলিশকে দিয়ে ওঁকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে, রোজ হুমকি দেওয়া হয়েছে। এমনকি প্রতিদিন সন্ধার পর তাঁকে থানায় নিয়ে গিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে।’
২০১৭ সালে তাঁদের সম্পর্কে চিড় ধরে বলে জানা যায়। তারপর থেকেই আলাদা থাকেন দুজনে। এরপর ২০২০ সালের মে মাসে নওয়াজের নামে ডিভোর্স মামলা ঠুকে দেন আলিয়া। তবে পরের বছরই সুর পালটে সেই মামলা প্রত্যাহার করেন, জানান ফের একবার সংসার করতে আগ্রহী তিনি। তবে গত বছরের শেষের দিকে ফের দুজনের ঝামেলার খবর সামনে