২০২৪ সালে কার্যত গোটা দেশ জুড়ে বড় পরীক্ষার মুখে পড়তে হতে পারে বিজেপিকে। বাংলাতেও গেরুয়া শিবিরের অগ্নিপরীক্ষা। কিন্তু কার নেতৃত্বে পরীক্ষায় বসবে বঙ্গ বিজেপি? সুকান্ত মজুমদার নাকি দিলীপ ঘোষ? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছিলেন অনেকেই। তবে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে এই প্রশ্নের জবাব অনেকটাই মিলেছে।
দল সূত্রে খবর, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে যেমন জেপি নাড্ডার উপর আস্থা রেখেছে দল, তেমনি লোকসভা নির্বাচনে বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্বে থাকছেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তিনি উদ্ভিদবিদ্যার অধ্য়াপক। ২০২১ সাল থেকে তাঁর উপরই রয়েছে বঙ্গ বিজেপির দায়িত্ব। সেই সুকান্ত মজুমদার অন্তত ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজ্য সভাপতির চেয়ারেই থাকবেন। এমনটাই ঠিক হয়েছে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে।
এদিকে ফের সভাপতির চেয়ারে বসেই বুধবার রাতে বাংলায় আসতে পারেন জেপি নাড্ডা। বৃহস্পতিবার নদিয়ায় সভা করবেন নাড্ডা। এরপর তিনি যাবেন মায়াপুর সফরে।
এদিকে বিজেপি সূত্রে খবর, ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটো বিজেপির পেয়েছিল ১৮টি আসন। সবমিলিয়ে বিজেপির ছিল ১৮জন সাংসদ। আর তখন বিজেপির রাজ্য সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন দিলীপ ঘোষ। কিন্তু তারপরে গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। রাজ্য সভাপতির পদ যায় দিলীপ ঘোষের। সেই জায়গায় আনা হয় বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদারকে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকের মতে, এবার সুকান্ত মজুমদারের সামনে দু দুটো পরীক্ষা। একটি হল পঞ্চায়েত নির্বাচন। অপরটি হল লোকসভা নির্বাচন। দুটি নির্বাচনেই বঙ্গ বিজেপির হাল ধরতে হবে সুকান্ত মজুমদারকে। নিঃসন্দেহে অগ্নিপরীক্ষা। তবে এবার অবশ্য তাঁকে লড়তে হবে গত লোকসভা নির্বাচনের সাফল্যের সঙ্গেও। যে নির্বাচনে প্রথমবারের জন্য বিজেপি বাংলায় তার ক্ষমতার পরীক্ষায় অনেকটাই সফল হয়েছিল। আর সেই যুদ্ধে বিজেপি টিমের ক্যাপ্টেন ছিলেন দিলীপ ঘোষ। সেক্ষেত্রে এবার সুকান্ত মজুমদারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। তাঁর সঙ্গে তুলনা হতে পারে দিলীপ ঘোষের সাফল্যের। গত লোকসভা নির্বাচনের সাফল্যকে কি ছাপিয়ে যেতে পারবেন সুকান্ত মজুমদার?
অন্যদিকে সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। গোটা রাজ্য জুড়ে হিংসার সম্ভাবনা প্রবল হয়ে উঠেছে। সেই হিংসার পরিবেশের মধ্যে সমস্ত আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কাজ কতটা করতে পারবে বিজেপি, সেটাও প্রশ্নের। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বর্তমানে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে সুকান্ত মজুমদারের সম্পর্ক যথেষ্টই ভালো। কেন্দ্রীয় বিজেপিরও গুডবুকে রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। সেক্ষেত্রে তৃণমূলের সঙ্গে টেক্কা দিতে সুকান্ত -শুভেন্দু জুটির উপরেই আস্থা রাখছে সর্বভারতীয় বিজেপি। সেক্ষেত্রে দলে পদ যেটাই হোক, দিলীপের গুরুত্ব কিছুটা কমছে বলেই মনে করছেন অনেকে।