সদ্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য বলেছেন, ‘সতর্কতার প্রয়োজন, আতঙ্কের নয়।’ করোনা নিয়ে তাঁর এই বার্তা বেশ প্রাসঙ্গিক। উল্লেখ্য, গত ২ বছরে করোনার জেরে শারীরিক দিক থেকে যেমন ক্ষতি দেখা গিয়েছে, তেমনই মানসিকভাবেও এই করোনা আতঙ্কে অনেকেই বিপর্যস্ত হয়েছেন। করোনা থেকে ত্রাণ পেতে বারবার সামাজিক আইসোলেশনের কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, ঘরে থাকার কথা। আর সেই মতোই অন্ধ্রপ্রদেশের দুই মহিলা এই ২ বছরে ঘরেই কার্যত নিজেদের বন্দি করে রেখেছিলেন। শেষে সদ্য তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নেপথ্যে রয়েছে এক করুণ ‘কারণ’।
এই ঘটনা অন্ধ্রপ্রদেশের পূর্ব গোদাবরী দেলার কুইয়েরু গ্রামের। সেখানে ওই দুই মহিলার প্রতিবেশীদের দাবি, বহুদিন ধরেই দুই মহিলা খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। মা ও মেয়ের এক ছাদের তলায় বসবাস ছিল। তবে কোভিড আতঙ্কে তাঁরা ২০২০ সাল থেকে কার্যত নিজেদের ঘরবন্দি করে রাখতে শুরু করেন। এই সময়কালে ৪১ বছর বয়সী ওই মহিলার স্বামী তাঁদের এসে খাবার দিয়ে যেতেন। তবে গত সপ্তাহে স্বামীর থেকে খাবার নেওয়া তাঁরা বন্ধ করেন। আর বাড়ি থেকে বের হতে চান না। এরপরই হাসপাতালে যোগাযোগ করেন মহিলার স্বামী। ছুটে আসেন চিকিৎসকরা। এরপরই দেখা যায় মহিলাদের শারীরিক অবস্থা এমনই যে তাঁদের সত্ত্বর ভর্তি করতে হবে হাসপাতালে।
অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাড়া সরকারি হাসপাতালে দুই মহিলার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। সেখানের চিকিৎসক টিএনএম ডক্টর সুপ্রিয়া যিনি স্থানীয় হাসপাতালে কর্মরত, তিনি বলেন, ওই মহিলাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ক্রমাগত খারাপের দিকে যাচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘ওঁদের সঙ্গে কথা বলতে গেলেই ওঁরা নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন। আর চাদর দিয়ে নিজেদের ঢেকে নিচ্ছেন। স্থানীয় পঞ্চায়েত অফিশিয়ালদের উদ্যোগে শেষমেশ তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’ স্বাস্থ্যকর্মীরা বলছেন,তাঁরা ওই মহিলাদের বাড়ি যখনই যেতেন তখনই দেখতেন তাঁরা বাড়ির ভিতরে জানলা থেকে কথা বলছেন। মনে করা হচ্ছে, করোনা ঘিরে প্রবল আতঙ্কের মধ্যে থেকে তাঁদের মানসিক বিপর্যয় ঘটেছে। আপাতত তাঁরা চিকিৎসাধীন।